Sunday, July 7, 2024

গণতন্ত্রবান্ধব রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশা

আমরা গণতন্ত্র চাই। গণতন্ত্রের প্রতি চরম অসন্তুষ্টির এই সময়েও গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের আগ্রহ কমেনি। কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেন্টার অব দ্য ফিউচার অব ডেমোক্রেসি’  গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের মনোভাব জানার জন্য ১৫৪টি দেশের ৪০ লাখ মানুষের ওপর সাড়ে তিন হাজার জরিপ পরিচালনা করে। জরিপের ফলাফলে জানা যায়, বর্তমান সময়ে গণতন্ত্রের প্রতি মানুষ চরম অসন্তুষ্ট।

 
জরিপের ফলাফলে সতর্ক করে বলা হয়েছে, বিশ্বের অনেক দেশে গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা এখন ‘উদ্বেগের’ পর্যায়ে রয়েছে। গণতন্ত্রের প্রতি মানুষের অসন্তুষ্টির এই মাত্রা ‘রেকর্ড উচ্চ পর্যায়ে’ রয়েছে। জরিপ পরিচালনাকারীদের একজন রবার্তো ফাও বলেন, ‘আমরা দেখেছি, বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রতি অসন্তুষ্টির মাত্রা বেড়ে চলেছে দিন দিন। উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে গত ২৫ বছরের মধ্যে গণতন্ত্রের প্রতি অসন্তুষ্টি সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।
 

 

গবেষকরা বলছেন, সবচেয়ে বেশি বা উচ্চমাত্রায় অসন্তুষ্টি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে।  যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান আরব ব্যারোমিটার গণতন্ত্র বিষয়ে মানুষের মনোভাব জানতে ৯টি আরব দেশ এবং ফিলিস্তিনি এলাকায় প্রায় ২৩ হাজার মানুষের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে। জরিপে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ মানুষই এই মত পোষণ করে যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অধীনে অর্থনীতি দুর্বল হয়ে যায়। অথচ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার দাবিতে আরববিশ্বের অনেক দেশে তথাকথিত ‘আরব বসন্ত’ প্রতিবাদ হয়েছে মাত্র এক দশকের কিছু বেশি সময় আগে।

 
আরব ব্যারোমিটারের পরিচালক মাইকেল রবিন্স বলছেন, ২০১৮-১৯-এ চালানো এর আগের জরিপের পর থেকে ওই অঞ্চলে গণতন্ত্র নিয়ে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে। ‘মানুষের মধ্যে এই বিশ্বাসটা আরো বেড়েছে যে গণতান্ত্রিক সরকার কোনো নিখুঁত সরকার ব্যবস্থা নয় এবং এই ব্যবস্থায় সব সমস্যার সমাধান সম্ভব হয় না’। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগই মনে করে সরকারের নীতিমালা কতটা কার্যকর, সেটাই তাদের জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটা কোন ধরনের সরকার, তা নিয়ে তারা মাথা ঘামায় না। সরকারের ধরনের চেয়ে মানুষ একজন কার্যক্ষম সরকার পেতে বেশি আগ্রহী।
 
বেশির ভাগ সাক্ষাৎকারদাতা বলেছেন, তাঁদের দেশের জন্য ও সরকারের কাজ হাসিলের জন্য প্রয়োজন শক্তিধর নেতা। প্রশ্ন হলো, গণতন্ত্র কি তাহলে মৃত্যুপথযাত্রী? গবেষকরা মনে করছেন, এ কথা বলার সময় এখনো আসেনি।

 

গণতন্ত্রবান্ধব রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও আওয়ামী লীগের কাছে প্রত্যাশাতাহলে কী? হয়তো বলা যেতে পারে, গণতন্ত্রের জন্য এই সময়টা মধ্যবয়সের সংকট বা ‘মিড লাইফ ক্রাইসিস’। উইনস্টন চার্চিল বলেছেন, ‘Many forms of government have been tried, and will be tried in this world of sin and woe. No one pretends that democracy is perfect or all-wise. Indeed, it has been said that democracy is the worst form of government except for all those other forms that have been tried from time to time.’  তবু গণতন্ত্রই বিশ্বব্যাপী কাঙ্ক্ষিত সরকার ব্যবস্থা।

গণতন্ত্রের সঙ্গে সুষ্ঠু রাজনীতি, আইনের শাসন, গণমুখী শিক্ষা, সুশাসন, ন্যায়বিচার, দুর্নীতি প্রতিরোধ, অর্থপাচার নিরোধ, সহনীয় দ্রব্যমূল্য, অসাম্প্রদায়িকতাসহ রাষ্ট্রের মাইক্রো ও ম্যাক্রো লেভেলের সব কিছুই সংযুক্ত ও সম্পৃক্ত। আমাদের কিছু মানুষের গণতন্ত্রের প্রতি বুকের ছাতিফাটা দুর্বিনীত তৃষ্ণা গণতন্ত্রের প্রতি অন্যদের ভালোবাসাকে হার মানায়। তাদের এই চাওয়া বাস্তবতাবিবর্জিত ও একদেশদর্শী। এই সম্প্রদায়ের কাছে গণতন্ত্র মানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন। সংবিধান লঙ্ঘন ও উচ্চ আদালতের রায়কে অমান্য করে হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে তারা গণতন্ত্রের ধন্বন্তরী দাওয়াই মনে করে। গণতন্ত্রের প্রতি অতি আসক্তির কারণে তারা মুক্তিযুদ্ধকে নির্বাসনে পাঠাতে কুণ্ঠিত নয়। গণতন্ত্রের জন্য তারা অসাম্প্রদায়িকতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদের সঙ্গে আপস করতে দ্বিধান্বিত নয়। গণতন্ত্রের প্রতি তাদের দুর্নিবার আকর্ষণের কাছে রাষ্ট্রের স্থপতি ও তাঁর স্ত্রী, শিশুপুত্রসহ সব পুত্র হত্যা, পুত্রবধূ এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যকে হত্যাকারীদের সাংবিধানিক দায়মুক্তি দিয়ে বিচারের পথ রুদ্ধ করা তাদের কাছে নস্যি। স্বাধীনতার নেতৃত্ব দানকারী একটি রাজনৈতিক দলের সভায় গ্রেনেড হামলা করে নেতাকর্মীদের হত্যা করে বিচারের পথ রুদ্ধ করতে নানা কৌশলের আশ্রয় গ্রহণকে তারা গণতন্ত্রের জন্য অন্তরায় মনে করে না। তাদের দৃষ্টিতে গণতন্ত্রের শত্রু আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধুকন্যা, যে কারণে স্মরণকালের অবাধ ও সুষ্ঠু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনকেও তারা প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করে। নির্বাচনের পর নানা বিদেশি নিষেধাজ্ঞার জুজুর ভয় দেখায়।

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনৈতিক লক্ষ্য পূরণে সহযোগিতা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং নতুন সরকারের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে দৃঢ় প্রত্যয়ের কথা জানিয়ে যখন জো বাইডেন বঙ্গবন্ধুকন্যাকে চিঠি লেখেন, তখন তার মধ্যেও তারা নেতিবাচক বিষয় খুঁজে বের করে। বিষয়টা অনেকখানি এমন যে ভর্তি হলে কী হবে, ডিগ্রি পাবে না। ডিগ্রি পেলে কী হবে, চাকরি পাবে না। চাকরি পেলে কী হবে, বেতন পাবে না। এই মানুষগুলো বুঝতে একেবারেই অক্ষম কিংবা জেগে ঘুমানোর মতো ইচ্ছা করেই বুঝতে চায় না যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি উন্নত গণতন্ত্রের জন্য মোটেও উপযোগী নয়। গ্রামাঞ্চলে প্রবাদ আছে, ‘বিড়াল দিয়ে হাল-চাষ হয় না।’ তেমনি যেসব রাজনৈতিক দল বাংলাদেশে বিদ্যমান রয়েছে, তাদের যেসব কর্মকাণ্ড আমরা প্রতিনিয়ত দেখছি, তা গণতন্ত্রবান্ধব নয়। তার পরও বঙ্গবন্ধুকন্যা ও আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চায় এই নষ্টদের দল। বিদেশি রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে, বিচার বিভাগকে বিতর্কিত করে বঙ্গবন্ধুকন্যার সরকারকে বিপদে ফেলতে এখনো সক্রিয় এরা।

আওয়ামী লীগ কেবল বাংলাদেশ নয়, এই উপমহাদেশের প্রাচীনতম একটি দল। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দলটির জন্ম হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করে গণতান্ত্রিকভাবে কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগের ঘোষণাপত্রে সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ রয়েছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে গণতন্ত্রচর্চার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে নিয়মিতভাবে কাউন্সিল অনুষ্ঠান, সভাপতিমণ্ডলীর বৈঠক, কার্যনির্বাহী সংসদ বা পার্লামেন্টারি বোর্ড প্রভৃতির কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। আওয়ামী লীগের প্রধান সাংগঠনিক স্তর বা কমিটি হলো কাউন্সিল, জাতীয় কমিটি, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি ও সভাপতিমণ্ডলী। গঠনতন্ত্রের অনুচ্ছেদ ৬-এ বলা হয়েছে, (ক) প্রতি তিন বৎসর অন্তর জেলা আওয়ামী লীগ ও বিভিন্ন মহানগর আওয়ামী লীগ দ্বারা নির্বাচিত নির্দিষ্টসংখ্যক কাউন্সিলর সমবায়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কাউন্সিল গঠিত হইবে।’ কাউন্সিল সভার ক্ষেত্রে গঠনতন্ত্রের ১১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনী অধিবেশন ব্যতীত বৎসরে অন্তত একবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিশেষ কাউন্সিল সভা আহ্বান করিতে হইবে।’ গঠনতন্ত্রের ২১ অনুচ্ছেদে কার্যনির্বাহী সংসদ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সভাপতি, সভাপতিমণ্ডীর সদস্যবৃন্দ, সাধারণ সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও কোষাধ্যক্ষ নিজ নিজ পদে ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল কর্তৃক কাউন্সিলরদের মধ্য হইতে নির্বাচিত হইবেন।’ গঠনতন্ত্রের ২৬ ধারা অনুসারে দলে ৪১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ আছে, যারা দলের থিংকট্যাংক। এই পরিষদের সদস্যদের মনোনীত করেন সভাপতি। গঠতন্ত্রের বিধান অনুযায়ী সভাপতি ‘উপদেষ্টা পরিষদের সহিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে পরামর্শ করিবেন।’

জিয়াউর রহমান একাধারে রাষ্ট্রপতি, সেনাবাহিনী প্রধান ও প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে ক্ষমতাসীন হয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) প্রতিষ্ঠার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদান করেন। ক্ষমতার সব সুযোগ-সুবিধা ও শক্তি-প্রলোভন ব্যবহার করে দলছুট ও সুবিধাবাদীদের নিয়ে গঠিত দল বিএনপির মধ্যে গণতন্ত্রচর্চার অভাব গোড়া থেকেই প্রকট। নিয়মিত কাউন্সিল বা সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের ধারা থেকে দলটি বরাবরই দূরে থেকেছে। ২০০৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিএনপির সর্বশেষ পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয় প্রায় ১৬ বছর পর। সেই থেকে গত ১৫ বছরে আর কোনো কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়নি। অথচ দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর কাউন্সিল হওয়ার কথা। গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ (আরপিও) অনুসারে দলের গঠনতন্ত্রে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে কাউন্সিল করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গঠনতন্ত্রে এক ব্যক্তি তথা চেয়ারপারসন সর্বেসর্বা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। একচ্ছত্র ক্ষমতা প্রয়োগ করে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা কমিটি, নির্বাহী কমিটি ও পার্লামেন্টারি বোর্ডের সদস্যদের মনোনীত করেছেন। গঠনতন্ত্রে পদ না থাকা সত্ত্বেও নিজের ছেলে তারেক রহমানকে ‘সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব’ পদে নিয়োগ দিয়েছিলেন। এর আগে গঠনতন্ত্রের বিধান লঙ্ঘন করে খালেদা জিয়া নিজের ভাই সাঈদ এস্কান্দারকে দলের ভাইস চেয়ারপারসন মনোনীত করেছিলেন। দলীয় প্রধানের এই সর্বাত্মক ক্ষমতা গণতন্ত্রের ধারণার বিরুদ্ধে। একজন ব্যক্তির ক্ষমতা ঘিরে যে দলের গঠনতন্ত্র, সে দল সরকারে গেলে গণতান্ত্রিক রীতিনীতির চর্চা করতে পারবে না, এটাই স্বাভাবিক।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ক্ষমতা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের চেয়েও বেশি। কথিত আছে, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট নারীকে পুরুষ, আর পুরুষকে নারীতে রূপান্তর করা ছাড়া সবই করতে পারে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান একক ইচ্ছায় কোনো কারণ দর্শানোর সুযোগ ব্যতিরেকে যাকে খুশি দল থেকে বহিষ্কার কিংবা দলের যেকোনো পদে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। তদুপরি এই দলের শীর্ষ কয়েকজন নেতা রাজনৈতিক নীতি-আদর্শের চেয়ে নানা নাটকীয়তার মাধ্যমে নাজায়েজ সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে দর-কষাকষির অভিযোগে অভিযুক্ত। ব্যক্তির ইচ্ছাখুশি দল চালানোর কারণে দল কয়েক দফা ভেঙেছে।

জামায়াতে ইসলামী তাদের স্বাধীনতাবিরোধিতার বিষয়ে ভুল স্বীকার করা ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতি থেকে সরে আসার ঘোষণা দেয়নি। অধিকন্তু মুক্তিযুদ্ধে তাদের যেসব নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়ে দণ্ডিত হয়েছেন, তা মেনে নেয়নি। বরং দলটি বিচার করার অপরাধে আওয়ামী লীগ, বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকন্যার বিরুদ্ধে যুদ্ধের মানসিকতা পোষণ করে। প্রতিশোধ নিতে তারা সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে। বাম দলগুলোর কিছু আওয়ামী লীগ ও কিছু বিএনপির সঙ্গে ভিড়েছে। অন্যরা বাস্তবতাবিবর্জিত পুরনো তত্ত্ব নিয়েই পড়ে রয়েছে। এ ছাড়া হঠাৎ গজিয়ে ওঠা কিছু সংগঠন নিজেদের ‘দল’ দাবি করলেও মানদণ্ড বিবেচনায় তার অনেকগুলোই রাজনৈতিক দল নয়। এদের অনেকগুলোই হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছে। জাতীয় স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থ তাদের কাছে মুখ্য বিষয়। কোনো কোনো দলের জন্ম হয়েছে শুধু একটি বিশেষ দলের বিরোধিতা করার জন্য। এরা মুখে যা-ই বলুক, জনসাধারণের স্বার্থ উপেক্ষা করে এরা বিশেষ এজেন্ডা বাস্তবায়নে অন্যদের যন্ত্রী হিসেবে কাজ করছে। এসব সংগঠন রাজনৈতিক দল নয়, পুতুল উপগোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছে।

আমাদের রাজনৈতিক দলের মধ্যে গণতন্ত্রচর্চা নেই, এমনকি গণতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার ন্যূনতম মানদণ্ডও মানা হয় না। দল চলে একক ব্যক্তির ইচ্ছায়। এমন দলের কাছে আমরা কিভাবে গণতান্ত্রিক শাসন ও গণতান্ত্রিক রীতিনীতি আশা করতে পারি? এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগের পক্ষে কি সম্ভব গণতন্ত্রচর্চার একটি অবাধ রাজনৈতিক সংস্কৃতির ধারা প্রতিষ্ঠা করা? গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ করা? দেশে গণতান্ত্রিক ধারা প্রতিষ্ঠিত করা? সময়ই বলে দেবে গণতন্ত্রবান্ধব রাজনৈতিক সংস্কৃতির জন্য আমাদের আর কতকাল অপেক্ষা করতে হবে? আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা, আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তারা আরো কঠোর হবে। দুর্নীতি ও অর্থপাচার রোধে আক্ষরিক অর্থে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে হবে। আর সেটি হলে গণতন্ত্রবান্ধব রাজনৈতিক সংস্কৃতির অভাব সত্ত্বেও জনগণ গণতন্ত্রের সুফল ভোগ করতে থাকবে। আর্থ-সামাজিক উন্নতির মাধ্যমে রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন তথা উচ্চ আয়ের দেশের মর্যাদা অর্জন ত্বরান্বিত হবে।

লেখক : অধ্যাপক, আইন বিভাগ

চট্টগাাম বিশ্ববিদ্যালয়

 zhossain1965@gmail.com

spot_imgspot_img

বুয়েটের শিক্ষার্থীরা ‘উচ্ছ্বসিত’ টগি ফান ওয়ার্ল্ডের লেজার ট্যাগে

টগি ফান ওয়ার্ল্ড থিম পার্কে সম্প্রতি আন্ত বিভাগ ‘লেজার ট্যাগ’  টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ২০২৩ সালের ব্যাচ। গত বুধবার ঢাকার বসুন্ধরা...

সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস হেরে গেছেন

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস এবারের নির্বাচনে হেরে গেছেন। ২০১০ সাল থেকে এমপি থাকা ট্রাস ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলীয় নরফোক সাউথ ওয়েস্ট নির্বাচনী এলাকায় লেবারদের কাছে ৬৩০...

পশ্চিম তীরে ইসরায়েলী অভিযানে ৫ ফিলিস্তিনী নিহত

অধিকৃত পশ্চিম তীরের জেনিনে আজ সকালে ইসরায়েলী সামরিক অভিযানে ৫ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় শুক্রবার একথা জানিয়েছে। চলতি সপ্তাহে ইসরায়েলী অভিযানে এই অঞ্চলে ১২...

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here